Monday, 31 October 2016

হাঁস

গ্রামে এই ভাবেই হাঁস পালা হয়।

নদীর ঘাট

এই ভাবেই নদীর ঘাটে মালা মাল পাড়া পার করা হয়।

Monday, 24 October 2016

বরই ফু্ল

 বৈজ্ঞানিক নাম Zizyphus mauritiana। বরই গাছ ছোট থেকে মাঝারি আকারের ঝোপাল প্রকৃতির বৃক্ষ। বরই গাছের স্বাভাবিক উচ্চতা ১২-১৩ মিটার। এই গাছ পত্রঝরা স্বভাবী অর্থাৎ শীতকালে পাতা ঝরে, বসন্তে নতুন পাতা আসে। বরই গাছের ডাল-পালা ঊর্ধ্বমুখী। বৎসরের সেপ্টেম্বরে - অক্টোবরে মৌসুমে গাছে  ফু্ল আসে।

Sunday, 23 October 2016

পেঁপে

পেঁপের ইংরেজি নাম Papaya ও বৈজ্ঞানিক নাম Carica papaya. আমাদের দেশের আবহাওয়া ও মাটি পেঁপে চাষের জন্য খুবই উপযোগী। আমাদের দেশে প্রায় সব জায়গাতেই পেঁপে জন্মায় তবে বৃহত্তর রাজশাহী, পাবনা ও যশোরে খুব ভাল মানের পেঁপে উৎপন্ন হয়।
বাংলাদেশে পেঁপে খুবই জনপ্রিয়। শুধুমাত্র ফল নয় সবজি হিসেবেও এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। পেঁপেতে প্রচুর ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি আছে। পরিচর্যা করলে সব ধরনের মাটিতেই পেঁপে চাষ করা যায়। সাধারণত এক বছরের মাথায় পেঁপে গাছে ফল ধরে। একটি গাছে বছরে ২০ থেকে ৫০টি ফল ধরে, সেই হিসেবে এক বিঘা জমিতে বছরে প্রায় ৭৭০০ থেকে ১৬৭৫০টি পেঁপে ধরে।  
ঔষধিগুণ:অজীর্ণ, কৃমি সংক্রমণ, আলসার, ত্বকে ঘা, একজিমা, কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা, ডিপথেরিয়া, অন্ত্রিক ও পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রভৃতি রোগ নিরাময়ে কাঁচা পেঁপের পেপেইন ব্যবহার করা হয়। পেঁপের আঠা ও বীজ ক্রিমিনাশক ও প্লীহা যকৃতের জন্য উপকারী।

Wednesday, 19 October 2016

ঘোড়া

ঘোড়া Equidae শ্রেণীকরণ সূত্র পরিবারের অন্তর্গত একটি অদ্ভুতদর্শন বক্রপদ খুড়ত্তয়ালা স্তন্যপায়ী প্রাণী। ঘোড়া বিগত ৪৫ থেকে ৫৫  লক্ষ বছর ধরে Hyracotherium ছোট বহু বক্রপদ জীব থেকে অভিব্যক্ত বর্তমানের বৃহৎ একক বক্রপদ প্রাণী। ৪০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ মানুষ,ঘোড়াকে ঘরে পোষা শুরু করে,এবং তাদের পোষ মানান ৩০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে বহুলভাবে শুরু হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। ঘোড়ার উপজাতির মধ্যে ক্যাবালাসকে পোষ মানান হয়,যদিও এদের কিছু পোষ্য দল বুনো ঘোড়ার মত খোলা জায়গায় বা জঙ্গলে বাস করে। ঘোড়া বা ঘোটক দ্রুতগামী চতুষ্পদ জন্তু যার পিঠে চড়া যায়। দ্রুতগামী বলে এর নাম তুরগ, তুরঙ্গম।
ঘোড়া প্রজাতির সাধারণভাবে মেজাজের উপর ভিত্তি করে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়:গতি এবং সহনশীলতা দিয়ে সজীব "উষ্ণ রক্ত";"ঠান্ডা রক্ত",যেমন ড্রাফট ঘোড়ারা ও কিছু হিসেবে টাট্টুগুলি,যারা একটু ধীর গতির, কিন্তু ভারী কাজের জন্য উপযুক্ত;এবং "মাঝারি মেজাজ",যা প্রায়শই প্রথম দুটি প্রকারের মিশ্রন, সঙ্কর ঘোড়া।
ঘোড়ার অভিব্যক্তিতে বসবাসের পরিবেশ পরিবর্তনের জন্য ঘোড়ার ক্রমিক বিবর্তন হয়।প্রথমে বনজ অবস্থায় তাদের আকার ছোটো ও আঙুলযুক্ত ক্ষুদ্র পা থাকলেও পরে তৃণভূমি সৃষ্টি হলে তারা বড়ো ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তাদের পায়ের তৃতীয় আঙুলটি ক্ষুর হিসাবে দ্রুত দোড়ে সহায়তা করে। ঘোড়ার বিবর্তনের ক্রমপর্যায়ে উদ্ভূত বিভিন্ন ঘোড়া ও তাদের পরিবর্তনের বিষয় আলোচনা করলে বিবর্তন সম্পর্কে ধারণা করা যায়। নীচে বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্ত ঘোড়ার জীবাশ্মের গঠনগত বৈশিষ্ট্য আলোচিত হল।

মৎস্যকন্যা

নূহাশপল্লীর বিশাল মাঠের শেষ প্রান্ত থেকে হুমায়ূন আহমেদ নিবিড় পরিচর্যায় গড়ে তুলেছেন একটি ঔষধি গাছের বাগান। বাগানের মধ্যে আছে আকর্ষণীয় জলাধার, যার মধ্যভাগের মৎস্যকন্যার মূর্তিটি দেখা মতো।
location:নূহাশপল্লী

বৃষ্টি বিলাস

হুমায়ুন আহমেদ ভালবাসতেন বৃষ্টি এবং পূর্ণিমার রাত। বৃষ্টি দেখার জন্য তিনি ‘বৃষ্টি বিলাস’ নামে একটি কক্ষ নির্মাণ করেছিলেন। হুমায়ুন আহমেদ যেন চাঁদের ছায়া দেখতে পারেন এজন্য এখানকার সবুজ উঠান সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হত।
location: নূহাশপল্লী

ফ্যান্টাসি কিংডম

ঢাকার অদূরে অবস্থিত বিনোদনের স্বর্গরাজ্য বলে খ্যাত ফ্যান্টাসি কিংডম বিনোদনপ্রিয় বাঙালীদের কাছে একটি জনপ্রিয় নাম। বিশ্বমানের বিনোদন সেবা, চমৎকার ল্যান্ড স্কেপিং ও উত্তেজনাকর সব রাইডস্ নিয়ে তৈরি ফ্যান্টাসি কিংডম, যা এরই মধ্যে বিনোদনপিপাসু ছোট-বড় সকলের কাছে বিনোদনের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। দুরন্ত গতিতে ছুটে চলা রোমাঞ্চকর অনুভূতি ও শিহরণ জাগানো রাইড রোলার কোস্টার এই পার্কের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাইডগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিনোদনের স্বর্গরাজ্য এই ফ্যান্টাসি কিংডমের রাজা আশু ও রানী লিয়া। বিশ্বমানের আদলে তৈরি এই পার্কের সবকিছুর মধ্যে রয়েছে রাজা-রানীর সেই হারানো রাজ্যের সুর। এ ছাড়া রয়েছে জায়ান্ট ফেরিস হুইল, জুজু ট্রেন, হ্যাপি ক্যাঙ্গার, বাম্পারকার, ম্যাজিক কার্পেট, সান্তা মারিয়া, জায়ান্ট স্প্ল্যাশ, জিপ এ্যারাউন্ড, পনি এ্যাডভেঞ্চার, ইজি ডিজিসহ ছোট-বড় সকলের জন্য মজাদার সব রাইডস্।

হুমায়ূন আহমেদ এর সমাধি

কিংবদন্তি প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ এর সমাধিস্থল।
location:নুহাশ_পল্লী

অজগর

অজগর বা পাইথন (ইংরেজি: pythons) হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম সাপ। অজগরকে ময়াল নামেও ডাকা হয়। এরা বিষহীন আদিম সাপ। এদের পিছনের পা-এর চিহ্ন পুরো বিলুপ্ত হয়নি।
এরা শিকারকে জোরে পেঁচিয়ে/পরিবেষ্টন (constrict) করে এরা তার দম বন্ধ করে। এরা শীকারকে সাধারনত মাথার দিক থেকে আস্ত গিলে খাওয়া শুরু করে। কারন, এতে শীকারের বাধা দেয়ার ক্ষমতা কমে যায়। শীকার হজম করতে তাদের কয়েকদিন সময় লাগে।মৃত প্রাণি খায়না।
এদের অবলোহিত(তাপ) রশ্মি দেখার বিশেষ তাপদৃষ্টি(infrared vision) ইন্দ্রিয় আছে (যে ক্ষমতা কিছু বোড়াদেরও আছে কিন্তু গঠন ও বিবর্তন ভিন্ন পথের)। অজগরের উপরের ঠোঁট বরাআফ্রিকা মহাদেশের বিষুবীয় সাহারা অঞ্চলে পাইথন পাওয়া যায়। তবে এই মহাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকা যেমন, ওয়েষ্টার্ণ কেপ ও মাদাগাস্কারে এই প্রজাতির সাপ পাওয়া যায় না। এশিয়া মহাদেশে ভারত, বাংলাদেশ,নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, নিকোবর দ্বীপ এই সাপের বসতি আছে। এছাড়া দক্ষিণ চীন, ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ ও ইন্দোনেশিয়ায় পাইথন দেখতে পাওয়া যায়। [১]বর এই ইন্দ্রিয় অবস্থিত।পাইথন একটু দেরিতে প্রজনন শুরু করে। সাধারনত একটি সাপ ৫ থেকে ৬ বছর বয়সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়। একটি স্ত্রী পাইথন প্রচুর খাদ্যগ্রহন করে যথেষ্ট শক্তি অর্জন করার পর একসাথে প্রচুর ডিম পারে।

Tuesday, 18 October 2016

চালতা গাছ

চালতা (বৈজ্ঞানিক নাম: Dillenia indica) এক রকমের ভারতবর্ষীয় উদ্ভিদ। চালতার ফল খুব আদরণীয় নয়। এই ফল দিয়ে চাটনি ও আচার তৈরি হয়। এটি স্থানবিশেষে চালিতা, চাইলতে ইত্যাদি নামেও অভিহিত।[১] এর ইংরেজী নাম Elephant Apple। গাছটি দেখতে সুন্দর বলে শোভাবর্ধক তরু হিসাবেও কখনো কখনো উদ্যানে লাগানো হয়ে থাকে।
চালতার জন্ম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। এটি বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি দেশে জন্মে।

চালতা ফুল

চালতা গাছ মাঝির আকারের চিরহরিৎ বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। এ গাছ উচ্চতায় ১৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। গাছের গায়ে লালচে রঙের চকচকে বাকল থাকে। পাতার কিনারা খাঁজ কাটা, শিরা উঁচু সমান্তরাল। চালতার সাদা রঙের ফুল দেখতে সুন্দর ; এটি সুগন্ধযুক্ত। ফুলের ব্যাস ১৫-১৮ সেন্টিমিটার। ফুলে পাঁচটি মোটা পাঁপড়ি থাকে ; বৃতিগুলো সেসব পাঁপড়িকে আঁকড়ে ঘিরে রাখে। বছরের মে-জুন মাসে ফুল ফোটার মৌসুম।

আঁখ

ইংরেজী নামঃ    Sugarcane
বৈজ্ঞানিক নামঃ  Saccaram
বাংলাদেশে ১.৮০ লাখ হেক্টর জমিতে আঁখ আবাদ হয়। বাংলাদেশে আঁখের হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৪৩ মেট্রিক টন। যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। ভারতে আঁখের হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৫৬.৫৭ মেট্রিক টন, ইন্দোনেশিয়ায় ১২৩.৫০ মে. টন এবং তাইওয়ানে ১০১.৬১ মে. টন। বাংলাদেশে প্রতি হেক্টর জমিতে ২০০-৩০০ মে. টন আঁখ উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। অনেক চাষীর জমিতে ২৪৭ মে. টন আঁখ উৎপাদনের রেকর্ড রয়েছে। অতএব, আঁখ আবাদে ফলন বাড়াতে অনুমোদিত জাত ও প্রযুক্তি অনুসরণের বিকল্প নেই।
স্থানীয় অনেক জাত গুড় তৈরি ও রস পানের জন্য আবাদ করা হয়। যেমনঃ অমৃত, বারং, সিও-২০৮, সিও-৫২৭, কাজলা, মিশ্রি মালা, তুরাগ গ্যান্ডারি ইত্যাদি অঞ্চল বিশেষে আবাদ হয়ে থাকে।
বীজ নির্বাচনঃ
বীজ নির্বাচনের কাজ বীজ সংগ্রহের ১ বছর আগেই শুরু করতে হবে। বীজের জন্য সম্ভব হলে আলাদা বীজ আঁখ আবাদ করে উপযুক্ত যত্ন ও পরিচর্যার মাধ্যমে রোগবালাই মুক্ত রাখা সম্ভব। এভাবে আবাদকৃত প্রত্যায়িত বীজ আখ হতে বীজ সংগ্রহ করাই অধিক বিজ্ঞানসম্মত। আট তেকে দশ মাস বয়সী সতেজ রোগমুক্ত বীজ আশানুরুপ অংকুরোদগমের জন্য সবচেয়ে ভাল। বীজ আখ অবশ্যই শিকড়মুক্ত হতে হবে।প্রয়োজনে আখের এক-তৃতীয়াংশ বাদ দিয়ে উপরের দুই তৃতীয়াংশ বীজ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। বীজ আখ সংগ্রহের ৪-৫ সপ্তাহ পূর্বে বীজক্ষেতে হেক্টরপ্রতি ১০০ কেজি সার প্রয়োগ করে বীজ আখের গুণগত মান বৃদ্ধি করা সম্ভব। যে সব এলাকায় মাটিতে পর্যাপ্ত পটাশ নেই সে সব এলাকায় হেক্টরপ্রতি ৪০ কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করা যেতে পা
বীজখন্ড তৈরিঃ
বীজ আখ কর্তনের পর পাতা না ছাড়িয়েই পরিবহন করা প্রয়োজন। ধারালো এবং জীবাণুমুক্ত দা বা হাসুয়া দিয়ে বীজখন্ড তৈরি করতে হবে। দা পুড়িয়ে বা ডেটল দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বীজগুলো প্রায়োজনমত এক, দুই বা তিন চোখবিশষ্ট খন্ডে তৈরি করতে হবে।  যে ক্ষেতে আখ রোপন করা হবে তার পাশেই বীজখন্ড তৈরি করতে হবে। আখের গিরার উপরে ১ ইঞ্চি এবং নিচে ২-২.৫০ ইঞ্চি রেখে বীজখন্ড কাটতে হবে। একটি আখ থেকে সাধারণত ৮-৯টি দু’চোখ বিশিষ্ট বীজখন্ড পাওয়া যায়।
বীজ শোধন ও পলিথিন ব্যাগে চারা উৎপাদনঃ
আখের বীজ খন্ডগুলো কাটার পর ২০০ শক্তি সম্পন্ন ব্যাভিস্টিন ১ গ্রাম ১ লিটার পরিষ্কার পানিতে মিশিয়ে প্রায় ৩০ মিনিটকাল ডুবিয়ে রাখতে হবে। শোধন করা বীজখন্ডগুলো বীজতলায় অথবা পলিব্যাগে রোপন করতে হবে।
পলিব্যাগ ১২.৫ সে. মি. উচু ১০ সে.মি ব্যাস বিশিষ্ট হতে হবে। পলিব্যাগের প্লাস্টিক ০.০২ মিমি পুরু হবে। পলিব্যাগের জন্য ১ ভাগ দোআশ মাটির সাথে সমপরিমান গোবরসার খুব ভালকরে মিশিয়ে মাটি তৈরী করতে হবে। তৈরী করা মাটি দিয়ে পলিব্যাগের অর্ধেক অংশ মাটি দিয়ে ভরে দিন। মাটিতে বীজখন্ড এমনভাবে বসিয়ে দিন যাতে চোখটি মাটির উপর থাকে। সাতদিনের মধ্যে চারা গজাবে এবং ৩ সপ্তাহের মধ্যে শতকরা ৮০-৯০ ভাগ চোখ গজিয়ে চারা হবে। ৪০-৬০ দিনের মধ্যেই প্রতিটা চারায় ৪-৫ টি পাতা গজাবে এবং  তখনই চারা লাগানোর সময় হবে। যদি ৬০ দিনের মধ্যে চারা লাগানো না যায় তবে নিচের পাতাগুলো কেটে দিতে হবে এবং প্রয়োজনমত পলিব্যাগে সেচ দিতে হবে। পলিব্যাগের চারাতে মাজরা পোকার আক্রমণ হলে ১৭ মিলি ডায়াজিনন ৬০ ইসি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে চাকাতে সেপ্র করুন। চারাগুলো দুর্বল হলে ১০০ গস্খামইউরিয়া ২০ লিটার পানিতে মিশিয়ে চারায় সেপ্র করুন।
বীজতলায় চারা উৎপাদনঃ
এ পদ্ধতিতে সাধারণত ২ চোখ বিশিষ্ট বীজখন্ড বীজতলায় লাগানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে এক চোখ বিশিষ্ট বীজখন্ড বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে।
আখের পরিচর্যাঃ
মাটি আলগাকরণ ও আগাছা পরিস্কারঃ
প্রাথমিক অবস্থায় ভারী বৃষ্টিপাতের পর জমিতে জো এলে অবশ্যই মাটি আলগা করে দিতে হবে। সেচ দেয়ার পরও জমিতে জো এলে মাটি আলগা করে দিতে হবে।মাটি আলগাকরণের সময় আগাছা পরিস্কার করতে হবে। ইক্ষু রোপনের পর চার মাস পর্যন্ত অবশ্যই জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
আখের গোড়ায় মাটি দেয়াঃ
কুশি বের হওয়া শেষ হলে আর কোন নতুন কুশি হতে না দিয়ে ঝাড়ের গোড়ায় মাটি দিতে হবে। এর ১ মাস পর দ্বিতীয় বার মাটি দিতে হবে।
আখ ঝাড় বাঁধাঃ
আখ হেলে পড়লে কান্ডের বৃদ্ধি মন্থর হয়, পার্শ্ব কুশি গজায়, ওজন ও চিনির পরিমান কমে যায় এবং কিছু আখ মরে যায়। সাধারনত ভাদ্র থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত আখ হেলে পড়ে। তাই ঐ সময় আসার আগেই প্রথমে আখের শুকনো / আধা শুকনো পাতা দিয়ে প্রতিটি ঝাড় আলাদা ভাবে বাধতে হবে। পরে ২ সারির ৩/৪ টি ঝাড় একত্র করে আড়াআড়িভাবে বাধতে হবে।  আখ হেলে পড়লে বীজ আখের গুনাগুন নষ্ট হয়। এ কারণে বীজ আখ ক্ষেতে আখ বাধা দরকার।
সেচ প্রয়োগ ও অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনঃ
কেবলমাত্র সেচ প্রয়োগ করেই আখের ফলন ২০-২৫% বৃদ্ধি করা সম্ভব। আগাম আখ চাষের জন্য রোপনের ১-৭, ৩০-৩৫, ৬০-৬৫, ১২০-১২৫ এবং ১৫০-১৫৫ দিন পর মোট  ৫ বার সেচ দিতে হবে। যথেষ্ট বৃষ্টিপাত হলে ঐ সময়ে সেচের প্রয়োজন হবে না।
দীর্ঘ জলাবদ্ধতা আখের ফলনের উপর মারাত্নক বিরুপ প্রভাব ফেলে। তাই জলাবদ্ধ জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
আখের পোকা মাকড়ঃ
ডগার মাজরা পোকা
আক্রমণের লক্ষণ- ডিম হতে সদ্য ফুটে বের হওয়া কীড়াগুলো পাতার মধ্যশিরার মধ্য দিয়ে গর্ত করে শেষ পর্যন- কান্ডের উপরের মাথার শেষ প্রানে- পৌঁছে। নবীন পাতার মধ্যশিরার উপর পেন্সিলের দাগের ন্যায় সুড়ঙ্গ পথের উপসি’তিই এই পোকার আক্রমণের প্রথম লক্ষণ। এই দাগ পরে লাল রং ধারণ করে। নতুন উন্মোচিত পাতার গায়ে পাশাপাশি দুটি সমান-রাল সারিতে গুলির দাগের মতো ছিদ্রের উপসি’তি এই পোকার আক্রমণ সনাক্ত করার আরেকটি উপায়। আক্রান- গাছের মাইজ পাতা মরে যায়। মরা মাইজ পাতা ধরে টান দিলে সহজে খুলে আসে না। নবীন কুশি আক্রান- হলে দ্রুত মারা যায়। বয়স্ক গাছ আক্রান- হলে শুধু বর্ধিষ্ণু অঞ্চলটিই ক্ষতিগ্রস’ হয় এবং পরে চোখ হতে পার্শ্ব শাখা বের হয়।
যান্ত্রিক দমন পদ্ধতি- এই পোকার স্ত্রী মথ সবুজ পাতার নীচের দিকে গাদা করে ডিম পাড়ে। এগুলো সামান্য পাতাসহ কেটে সংগ্রহ করে ধ্বংস করতে হবে। জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন- এই পোকার মথ ধরে হাত দিয়ে পিষে মেরে ফেলতে হবে। ফেব্রুয়ারী থেকে জুন পর্যন- আক্রান- গাছগুলো পোকাসহ কেটে ধ্বংস করতে হবে।
রাসায়নিক দমন পদ্ধতি-
ক) ফুরাডান ৫জি/কুরাটার ৫জি/ ফুরাটাফ ৫জি/ ফুরাফুরান ৫জি/ সানফুরান ৫জি/ ব্রিফার ৫জি/ ফেনডোর ৫জি এর যে কোন ১টি কীটনাশক হেক্টর প্রতি ৪০ কেজি অথবা মার্শাল ৬জি কীটনাশক হে: প্রতি ৩৩ কেজি আখের সারির দু পাশে নালায় প্রয়োগ করতে হবে। অত:পর মাটি দিয়ে ঢেকে সেচ দিতে হবে। ১ম বার মার্চে এবং ২য় বার মে মাসে মোট দুবার প্রয়োগ করতে হবে।
আগাম মাজরা পোকা
আক্রমণের লক্ষণ- এই পোকার কীড়া মাটির সমতলে অবসি’ত কান্ড বা কুশির অংশ বিশেষে প্রবেশ করে। ১টি চারায় ১টি কীড়া প্রবেশ করে প্রবেশাঞ্চলের কোষ সমূহ সম্পুর্ন খেয়ে ফেলে। ফলে গাছের মাইজ মরে যায়। মাইজ ধরে টান দিলে সহজেই খুলে আসে। আক্রান- নবিন কুশি গুলি মারা যায়। ঝাড়ের সব কুশি গুলো ধ্বংস হলে ক্ষেতে শূণ্য স’ানের সৃষ্টি হয়। ফেব্রুয়ারী থেকে মে পর্যন- এই পোকার আক্রমণ তীব্র হয়।
যান্ত্রিক দমন পদ্ধতি- জানুয়ারী থেকে মে পর্যন- আক্রান- গাছ গুলি মাটির নিচ থেকে তুলে পোকাসহ ধ্বংস করে ফেলতে হবে।
রাসায়নিক দমন পদ্ধতি- ক) ফুরাডান ৫জি/কুরাটার ৫জি/ ফুরাটাফ ৫জি/ সানফুরান ৫জি/ এগ্রি ফুরান ৫জি/ ব্রিফার ৫জি/ ফেনডোর ৫জি/ ফুরাসান ৫জি/ রাজ ফুরান ৫জি এর যে কোন ১টি কীটনাশক হেক্টর প্রতি ৪০ কেজি অথবা মার্শাল ৬জি কীটনাশক হে: প্রতি ৩৩ কেজি অথবা লরস্‌বান ১৫ জি কীটনাশকটি হেক্টর প্রতি ১৫ কেজি রোপনের সময় নালায় অথবা পোকার ২য় প্রজন্মে (ফেব্রুয়ারী মাসে) আখের সারির দু পাশে ৮ সেমি গভীর নালায় ও গাছের গোড়ায় প্রয়োগ  করে মাটি দিয়ে ঢেকে সেচ দিতে হবে। অথবা  রিজেন্ট ৫০ এসসি কীটনাশকটি হেক্টর প্রতি ২ লিটার হারে রোপনকৃত বীজখন্ডের উপর সেপ্র করতে হবে।
কান্ডের মাজরা পোকা
আক্রমণের লক্ষণ- প্রাথমিক লক্ষণ হলো ক্ষেতের মধ্যে শুকনো মাথা বিশিষ্ট আখ গাছের উপসি’তি। পোকা আক্রমণের ফলে উপরের সমস- পাতাগুলো মরে যায়। আক্রান- কান্ডের গায়ে গুলির ছিদ্রের ন্যায় অসংখ্য ছিদ্র দেখা যায়। এগুলো দিয়ে করাতের গুড়োর মত লাল পদার্থ বের হয়। আক্রান- কান্ডের মধ্যে ২০০ পর্যন- কীড়া পাওয়া যায়। অতিমাত্রায় আক্রান- কান্ডগুলো হতে ক্ষেতে আক্রমণ ব্যপকভাকে ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান- বয়স্ক আখগাছে মাত্র কয়েকটি কীড়া পাওয়া যায়। এ অবস’ায় ক্ষেতে শুকিয়ে যাওয়া মাথা সচরাচর দেখা যায় না।
যান্ত্রিক দমন পদ্ধতি-মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন- প্রাথমিক আক্রান- গাছগুলো পোকাসহ কেটে ধ্বংস করতে হবে।
রাসায়নিক দমন পদ্ধতি- পাদান ৪ জি হেক্টরপ্রতি ৭৫ কেজি  আখের সারির উভয় পাশে নালা কেটে ছিটিয়ে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। জুন থেকে আগস্ট পর্যন- ২-৩ বার প্রয়োগ করতে হবে।
গোড়ার মাজরা পোকা
আক্রমণের লক্ষণ- এই পোকার কীড়া মাটির নীচে অবসি’ত গাছের অংশে প্রবেশ করে। সেখানকার কোষগুলি খেয়ে ফেলে।  ফলে নতুন চারাগুলোর  মাইজ মরে যায়। মাইজ ধরে টান দিলে সহজেই খুলে আসে না। আক্রমণ তীব্র হলে চারাগুলো মরে গিয়ে ল ক্ষেতে শূণ্য স’ানের সৃষ্টি হয়। বর্ষাকালে এদের আক্রমণ হ্রাস পেলেও অতিমাত্রায় আক্রান- ক্ষেতে ধ্বংসযজ্ঞ আখ কাটার আগে পর্যন- অব্যাহত থাকে। পাতার হলুদ-বাদামী রং ধারণ গোড়ার মাজরা পোকা আক্রমণের তীব্রতা হ্রাসের একটি নিদর্শন।
যান্ত্রিক দমন পদ্ধতি- এই পোকার কীড়া ও পুত্তলীগুলো আখ গাছের নীচের অংশে থেকে যায় ফলে সেখান থেকে তারা পূর্ণাংগ মথ হয়ে নুতন আখে আক্রমণ করে। কাজেই এই পোকা দমনের জন্য  আখ কাটার পর ঝাড়ের মোথাগুলো চাষ দিয়ে তুলে ফেলে জমা করে পোকাগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করতে হবে। এলাকায় সকল চাষীকে একযোগে এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
রাসায়নিক দমন পদ্ধতি- লরস্‌বান ১৫ জি হেক্টর প্রতি ১৫ কেজি প্রয়োগ করতে হবে। মার্চ, মে ও জুলাই মাসে ৩ বার প্রয়োগ করলে কার্যকরীভাবে দমন সম্ভব হবে।
হোয়াইট গ্রাব
আক্রমণের লক্ষণ- গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যাওয়া ও পাতার হাল্কা হলুদ রং ধারণ ক্ষেতে হোয়াইট গ্রাব আক্রমণের প্রথম লক্ষণ। ভীষণভাবে আক্রান- গাছ মারা যায়। পোকার কীড়াগুলো শিকড়ের কোষসমূহ খেতে থাকে এবং ক্রমে সমস- শিকড়গুচ্ছ ধ্বংস করে। মাঝে মাঝেই পোকার কীড়াগুলো মাটির নীচে অবসি’ত কান্ডের মধ্যে ঢুকে কান্ডের কোষগুলো খেতে থাকে। আক্রান- আখের ঝাড়গুলো অতি সহজেই মাটি থেকে টেনে তোলা যায়।
যান্ত্রিক দমন পদ্ধতি-হোয়াইট গ্রাবের বিটলগুলো সন্ধ্যাবেলা মাঠ থেকে উঠে এসে আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা ইত্যাদি গাছে আশ্রয় নেয় এবং রাতে অবস’ান করে। আবার ভোর বেলায় মাঠে প্রত্যাবর্তন করে। গাছে আশ্রয় নেয়া বিটল জানুয়ারী থেকে মে মাস পর্যন- আলোর ফাঁদে আঁটকে মারতে হবে।
রাসায়নিক দমন পদ্ধতি- ফুরাডান ৫জি/কুরাটার ৫জি/ ফুরাটাফ ৫জি/ সানফুরান ৫জি/ এগ্রি ফুরান ৫জি/ ব্রিফার ৫জি/ ফেনডোর ৫জি/ ফুরাসান ৫জি/ রাজ ফুরান ৫জি এর যে কোন ১টি কীটনাশক হেক্টর প্রতি ৪০ কেজি অথবা  মার্শাল ৬জি কীটনাশক হে: প্রতি ৩৩ কেজি অথবা  লরস্‌বান ১৫ জি কীটনাশকটি হেক্টর প্রতি ১৫ কেজি নালায় ও গাছের গোড়ায় প্রয়োগ  করে মাটি দিয়ে ঢেকে সেচ দিতে হবে। ১ম বার মার্চে এবং ২য় বার এপ্রিলে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
উই পোকা
আক্রমণের লক্ষণ- উইপোকা জমিতে রোপন করা বী;জখন্ডের দুই পাশের কাটা অংশ দিয়ে ঢুকে ভিতরের সবকিছু খেয়ে ফেলতে পারে। চোখও এদের আক্রমণের শিকার হয়। বয়স্ক আখ গাছের মাটি সংলগ্ন অংশ দিয়ে ঢুকে কোষসমূহ খেতে খেতে এরা উপরের দিকে উঠতে থাকে। নবীন চারাগুলো এদের আক্রমণে মারা যায়না কিন’ পাতা মলীন হলুদ রং ধারণ করে, কুশি বেরোনো ও শিকড় সৃষ্টি কমিয়ে দেয়।
যান্ত্রিক দমন পদ্ধতি- আশে পাশের জমিতে উই পোকার ঢিপি দেখলে তা কোদাল দিয়ে খুঁড়ে ভেঙ্গে ফেলতে হবে। রাণী উইকে খুঁজে বের করে মেরে ফেলতে হবে।
রাসায়নিক দমন পদ্ধতি- নিম্নের ক,খ,গ, ঘ. ঙ এর যে কোন একটি ব্যবস’া অবলম্বন করে উইপোকা দমন করা সম্ভব।
ক) ১ লিটার পানিতে গাউচো ৭০ ডব্লিউএস ২ গ্রাম/ক্রুজার ৭০ ডব্লিউএস ১ গ্রাম/টিড্ডো ২০ ইসি ৭ মিলি মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করে রোপনের পূর্বে বীজখন্ডগুলো ৩০ মিনিট চুবিয়ে শোধন করে রোপন করতে হবে।
খ) রাগবি ১০ জি/পাউন্স ১.৫ জি  হেক্টর প্রতি ২০ কেজি বীজখন্ড রোপনের সময় একবার (১ম বার) নালায় এবং মে মাসে (২য় বার) আখের সারির উভয় পাশে নালা কেটে নালায় ছিটিয়ে প্রয়োগ করে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে রিজেন্ট ৩ জি আর কীটনাশক হেক্টরপ্রতি ৩৩ কেজি রোপনের সময় নালায় বীজখন্ডের উপর ছিটিয়ে প্রয়োগ করে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে অথবা লরস্‌বান ১৫ জি কীটনাশকটি হেক্টর প্রতি ১৫ কেজি রোপনের সময় নালায় প্রয়োগ  করে মাটি দিয়ে ঢেকে সেচ দিতে হবে।
গ) রিজেন্ট ৫০ এসসি কীটনাশকটি হেক্টর প্রতি ২ লিটার অথবা এডমায়ার ২০০ এসএল হেক্টরপ্রতি ১ লিটার হারে রোপনকৃত বীজখন্ডের উপর সেপ্র করে মাটি দিয়ে  ঢেকে দিতে হবে।
ঘ) ডারসবান ২০ ইসি/ পাইরিফস ২০ ইসি/ ক্লাসিক ২০ ইসি হেক্টরপ্রতি ১১.২৫ লিটার বীজখন্ড রোপনের সময় নালায় (১ম বার) মার্চ মাসে (২য় বার) এবং মে মাসে (৩য় বার) পানির সাথে মিশিয়ে আখের সারির উভয় পাশে নালা কেটে নালায় ছিটিয়ে প্রয়োগ করে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
ঙ) টলস্টার ২ ডব্লিউপি হেক্টরপ্রতি ১০ কেজি হারে পানির সাথে মিশিয়ে রোপনের সময় সেপ্র করে মাটি দিয়ে  ঢেকে দিতে হবে। দ্বিতীয়বার মে মাসে গাছের গোড়ায় সেপ্র করে মাটি দিয়ে  ঢেকে দিতে হবে।
পাইরিলা
আক্রমণের লক্ষণ-নিম্ফ এবং বয়স্ক পোকা উভয়ই দলবদ্ধভাবে সবুজ পাতার নিম্নাংশ হতে রস শোষণ করে। রস শোষণ করার সময় পোকার শরীর হতে মধু জাতীয় পদার্থ নির্গত হয় যা সুটি মোল্ড নামক ছত্রাকের আক্রমণ ও বংশবিস-ারে সহায়ক হয়। এতে পাতার আলোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।
যান্ত্রিক দমন পদ্ধতি- ফেব্রুয়ারী থেকে জুন পর্যন- হাত জাল দ্বারা নিম্ফ ও পূর্ণাঙ্গ পোকা ধরে মেরে ফেলতে হবে।
জৈবিক দমন পদ্ধতি- এদের পূর্ণাঙ্গ/ নিম্ফের পরজীবি ইপিরিকানিয়ার পিউপা ( যা পাতায় লেগে থাকে) এবং ডিমের পরজীবি টেট্রাসটিকাস পাইরিলি (পাতায় ডিমের মধ্যে থাকে) এক জমি থেকে অন্য জমিতে বা একস’ান থেকে অন্য স’ানে স’ানান-রের মাধ্যমে বিস-ার করে পাইরিলা দমন করা যেতে পারে।
রাসায়নিক দমন পদ্ধতি- এডমায়ার / ইমিটাফ নামক কীটনাশক প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর সেপ্র করতে হবে।
ইক্ষুর মারাত্নক ক্ষতিকারক রোগ সমূহঃ
লাল পচা রোগ
লক্ষণ – এই রোগের আক্রমনে প্রধানত আখের কান্ড পচে যায়। অবশ্য পাতাও আক্রান- হতে পারে। কান্ডের গায়ে অবসি’ত পাতার গোড়া, বৃদ্ধিজনিত ফাটল কিংবা ক্ষতের মধ্যদিয়ে এ রোগের জীবাণু গাছের ভিতর প্রবেশ করে। যে অংশে জীবাণু প্রবেশ করে সেখানে অবসি’ত কোষগুলো দ্রুত লাল রং ধারণ করে পচতে শুরু করে। রোগের এ পর্যায়ে বাহ্যিক কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। অনুকুল পরিবেশে সমস- কান্ড পচে যেতে পারে। এই অবস’ায় আখের পাতাগুলো হলুদ হয়ে আসে- আসে- মরে যায়। আক্রান- আখ লম্বালম্বিভাবে কাটা হলে দেখা যায় যে, কোষগুলো পচে লাল রং ধারণ করেছে। লাল রং এর মধ্যে আড়াআড়িভাবে ছোপ ছোপ সাদা অংশ দ্বারা বিভক্তি দেখা যায়।
স্মাট রোগ
আক্রান- আখের পত্রগুচ্ছের মধ্য হতে চাবুকের মত একটি কয়েক ফুট লম্বা কালো শীষের উৎপত্তি হয়। চাবুকের সর্বোচ্চ অংশ বাঁকানো হতে পারে। প্রথম দিকে কালো শীষটি পাতলা রুপালি ঝিল্লি বা পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে। পর্দার ভিতরে কালো ঝুলকালির মত বস’গুলো স্মাট রোগের লক্ষ লক্ষ জীবাণু। এক পর্যায়ে রুপালি পর্দা ফেটে যায় এবং শীষ থেকে অসংখ্য জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। স্মাট আক্রান- ঝাড়ে সুস’ গাছের চেয়ে কুশির সংখ্যা অনেক বেশী হয় এবং ঘাসের মত মনে হয়।

উইল্ট রোগ
লক্ষণ প্রায় লালপচা রোগের অনুরুপ। আক্রান- গাছের পাতাগুলো আসে- আসে- হলুদ হয়ে মরে যায়। আক্রান- গাছ লম্বালম্বি কাটলে ভিতরের কোষসমূহ বেগুনি অথবা লাল রংধারণ করেছে বলে মনে হবে। ভিতরের মজ্জার কোষগুলো শুকিয়ে যেতে থাকে এবং ফাঁপা খোলের মত এলাকার সৃষ্টি হয়। চার-পাঁচ মাস বয়সে রোগের আক্রমন হলেও বয়স্ক আখ ছাড়া বাহ্যিক লক্ষন সুস্পস্ট হয় না।
ইক্ষুর রোগ দমন পদ্ধতি সমূহ ঃ
ইক্ষুর উপরোক্ত রোগ সমূহ দমনের জন্য নিম্নের পদ্ধতি সমূহের এক বা একাধিক ব্যবস’া সমন্বিতভাবে নিতে হবে।
ক) বীজ আখ শোধন – আখ লাগানোর পূর্বে বীজখন্ডগুলোকে ০.১% ব্যাভিস্টিন দ্রবণে (পানি ও ব্যাভিস্টিনের অনুপাত ১০০০ ঃ ১) ৩০ মিনিট ধরে শোধন করে রোপন করতে হবে। হেক্টর প্রতি প্রয়োজনীয় ৭-৭.৫ টন বীজ আখ শোধনের জন্য ২৫০ গ্রাম ব্যাভিস্টিন ২৫০ লিটার পানিতে মিশিয়ে দ্রবন তৈরী করতে হবে।

খ) আর্দ্র গরম বাতাসে বীজ শোধন ( এম এইচ এ টি) –  বীজখন্ড অথবা অর্ধেক সাইজের বা সম্পূর্ণ আখ এম এইচ এ টি প্লান্টে ৫৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ও ৯৫% এর অধিক আর্দ্রতায় ৪ ঘন্টাকাল শোধন করা হয়। শোধিত বীজ ঠান্ডা হলে ০.১% ব্যাভিস্টিন বা নোইন দ্রবণে ৩০ মিনিট শোধন করে মাটিতে রোপন করতে হবে। তাপ শোধিত বীজ ব্যাভিস্টিন বা নোইন দ্রবণে শোধন না করে সরাসরি রোপন করলে দেড় গুন বীজের প্রয়োজন হয়।

গ) গরম পানিতে বীজ শোধন –   সম্পূর্ণ আখ বা বীজ খন্ড গরম পানিতে বীজ শোধন যন্ত্রে ৫০ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রায় ৩ ঘন্টাকাল শোধন করা হয়। শোধিত বীজ ঠান্ডা হলে ০.১% ব্যাভিস্টিন বা নোইন দ্রবণে ৩০ মিনিট শোধন করে মাটিতে রোপন করতে হবে। তাপ শোধিত বীজ ব্যাভিস্টিন বা নোইন দ্রবণে শোধন না করে সরাসরি রোপন করলে দুই গুন বীজের প্রয়োজন হয়।

ঘ) রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার –  মোজাইক রোগমুক্ত বীজ প্লটের বীজ ব্যবহার করে এ রোগের আক্রমন প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

ঙ) রগিং –  বীজ আখ ক্ষেতে ২/৩ মাস অন-র অন-র মোজাইক রোগাক্রান- গাছ ঝাড় সহ তুলে ফেলতে হবে। বাহ্যিকভাবে যে কোন বীজবাহিত রোগ যথা লালপচা, স্মাট, সাদাপাতা, লীফ স্কাল্ড ইত্যাদি দেখা গেলে তা ঝাড় সহ তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

চ) ইক্ষুর পরজীবি বিজলী ঘাস দমন –  আক্রান- জমিতে সুষম সারের ব্যবহার বিশেষ করে একর প্রতি ১৬০ কেজি ইউরিয়া সার সমান ৩ কিসি-তে (রোপনের সময় নালায়, বৃষ্টিপাতের পর এপ্রিলে ও জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ) আখের জমিতে প্রয়োগ করতে হয়। বিজলী ঘাস দেখা গেলে ৫% ইউরিয়া দ্রবন (ইউরিয়া ঃ পানি = ১ ঃ ২০) রোদ্রজ্জল দিনে বিজলী ঘাসের উপর সেপ্র করলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘাস মারা যায়।
ছ) ফসলের অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলা –  আখ কাটার পর জমিতে চাষ দিয়ে ফসলের অবশিষ্টাংশ একত্র করে পুড়িয়ে ফেললে অনেক পোকা ও  রোগজীবাণুর আক্রমন প্রতিহত করা যায়।
 ফসল সংগ্রহ ঃ  আশ্বিন মাস থেকে ফাল্গুন- চৈত্র মাস পর্যন- আখ সংগ্রহ করা হয়।
ফসল সংগ্রহঃ
আশ্বিন মাস থেকে ফাল্গুন- চৈত্র মাস পর্যন- আখ সংগ্রহ করা হয়।
মুড়ি আখ চাষঃ
মুড়ি আখের চাষ মূল আখ চাষের চেয়ে লাভজনক। মুড়ি আখ চাষের ক্ষেত্রে বীজের প্রয়োজন হয় না। বীজ রোপন এবং জমি তৈরীর খরচ অনেক কম লাগে। মুড়ি আখ অনেক আগেই পরিপক্কতা লাভ করায় আগাম গুড় উৎপাদন করা যায় এবং চিনি কলে অধিক চিনি আহরন করা যায়। মুড়ি আখ চাষের জন্য আখ কাটার  ৭ দিনের মধ্যে মূল আখের পাতা ও পরিত্যাক্ত অংশ পুড়িয়ে, মোথা মাটির সমতলে কেটে ফেলা হয়। এরপর দুই সারি আখের মাঝে লাংগল দিয়ে ৩/৪ টি চাষ বা কোদাল দিয়ে কুপিয়ে অনুমোদিত মাত্রার অর্ধেক ইউরিয়া ও এমপি এবং সম্পূর্ণ টিএসপি সার প্রয়োগ করে মই দিয়ে জমি সমান করা হয়। অবশিষ্ট ইউরিয়া ও এমপি সার কুশি বের হওয়ার সময় উপরি প্রয়োগ করতে হবে। হেক্টর প্রতি সারের মাত্রা মূল আখ চাষের অনুরুপ তবে মুড়ি আখের ক্ষেতে হেক্টর প্রতি ১০০ কেজি ইউরিয়া সার বেশী দিতে হয়।
নতুন রোপনকৃত ইক্ষু কাটার পর সেই জমিতে কমপক্ষে একবার মুড়ি আখের চাষ করা উচিৎ
আখের জমিতে সাথি ফসল হিসেবে আলু, পিয়াজ, রসুন, মসুর ইত্যাদি ফসল চাষ করা যেতে পারে।

Sunday, 16 October 2016

শেফালী

শেফালী ফুল  হচ্ছে নিক্টান্থেস প্রজাতির একটি ফুল। এটি দক্ষিণ এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব থাইল্যান্ড থেকে পশ্চিমে বাংলাদেশ, ভারত, উত্তরে নেপাল, ও পূর্বে পাকিস্তান পর্যন্ত এলাকা জুড়ে দেখতে পাওয়া যায়। এই ফুল পশ্চিমবঙ্গের ও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি প্রদেশের রাষ্ট্রীয় ফুল। শিউলি গাছ নরম ধূসর ছাল বা বাকল বিশিষ্ট হয় এবং ১০ মিটারের মত লম্বা হয়। গাছের পাতা গুলো ৬-৭ সেন্টিমিটার লম্বা ও সমান্তরাল প্রান্তের বিপরীতমুখী থাকে। সুগন্ধি জাতীয় এই ফুলে রয়েছে পাঁচ থেকে সাতটি সাদা বৃতি ও মাঝে লালচে-কমলা টিউবের মত বৃন্ত। এর ফল চ্যাপ্টা ও বাদামী হৃদপিণ্ডাকৃতির। ফলের ব্যাস ২ সেন্টিমিটার এবং এটি দুই ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি ভাগে একটি করে বীজ থাকে।[১] এই ফুল শরৎকালে ফোটে। এর ফুলগুলি রাতে ফোটে এবং সকালে ঝরে যায়। শরৎ ও হেমন্ত কালের শিশির ভেজা সকালে ঝরে থাকা শিউলি অসম্ভব সুন্দর দৃশ্য তৈরি করে।

দিঘী লীলাবতী

হুমায়ূন আহমেদ এর  দিঘী লীলাবতী ।
location: নুহাশ পল্লী

রসুন্দি

রসুন্দি স্থানবিশেষ লতাপারুল বা নীলপারুল নামেও পরিচিত। প্রস্ফুটন প্রাচুর্য এবং রাজসিক ঐশ্বর্যের কারণে নীলপারুল ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় সর্বত্র।

রাজা হাঁস